বৃহস্পতিবার । ২০শে নভেম্বর, ২০২৫ । ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

জলমা শহররক্ষা বেড়িবাঁধে ভাঙনে টনক নড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের

বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি

বটিয়াঘাটা উপজেলার ১নং জলমা ইউনিয়নের কচুবুনিয়া এলাকায় কাজীবাছা নদীর তীরে জলমা শহর রক্ষা বেড়িবাঁধে ভাঙন রোধে অবশেষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের টনক নড়েছে। গতকাল বুধবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি, রিফাত হাসান ও এসও, সাইদুর রহমান সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ভাঙন রোধে উক্ত স্থানে সাময়িকভাবে বালু ভরে বস্তা ফেলা শুরু করেছে। ভাঙনের কারণে ইতঃপূর্বে উক্ত স্থান থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির হাইভোল্টেজের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৮৫-৮৬ সালে খুলনা শহরকে জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা করতে জলমা ইউনিয়নের জলমা মৌজার কাজীবাছা নদীর দু’মুখে দুটি বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি জলমা ইউনিয়নের চতুর্দিকে শহররক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে কাজীবাছা নদী গতিপথ পরিবর্তন করে জলমা ইউনিয়নের ভৌগোলিক অবস্থান ও সীমানার পরিবর্তন ঘটার পাশাপাশি ময়ূরী নদীতে জলাবদ্ধতা, পশুর ও নালুয়া নদী অস্তিত্ব হারিয়ে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া জলমা মৌজার হাজার হাজার একর জমি, জলমা-কচুবুনিয়া নামে দুটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

ওই দুটি গ্রামের মানুষ নদী ভাঙন জমিজমা, বাড়িঘর হারিয়ে গজালমারী ও জলমা এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি ওয়াপদার পাশে খোলা আকাশের নীচে মানবের জীবন যাপন করছে। অথচ এদের একসময়ে পুকুর ভরা মাছ, গোঁলা ভরা ধান, গোঁয়াল ভরা গরু, শিক্ষা দীক্ষা, সংস্কৃতি সবই ছিল। কিন্তু কাজীবাছা নদী তাদের সব কেড়ে নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি। এরপর জলমা মৌজার উক্ত জমি ভরাট হয়ে জেগে উঠলেও বিরাট এলাকার মানুষ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও স্থানীয় প্রশাসন ম্যানেজ করে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে। ভুক্তভোগীরা তাদের রেকর্ডীয় জমি দখল নিতে গেলে বিরাট পারের লোকেরা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে প্রকৃত জমির মালিকদের বেদখল করে চলেছে। আর সেই সময় থেকেই পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙন রোধে বিভিন্ন সময়ে সাময়িকভাবে কাজ করে তাদের বিল ভাউচারের বাড়িয়ে চলে আসছে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি রিফাত হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, “কাজীবাছা নদীর তীরে কচুবুনিয়া এলাকায় শহররক্ষা বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপুর্ণ স্থানে ভাঙন রোধে বালু ভর্তি বস্তা ফেলা হচ্ছে। পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে বিকল্প বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু যেখান থেকে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেখানে জনৈক নাসির উদ্দিন ও মুকুলের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি। তাদের নিকট রাস্তা নির্মাণে ২০ ফুট জায়গা চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ১০ ফুট জমি ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে। বাকি ১০ ফুট জমি মালিকেরা সরেজমিনে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে। বাকি ১০ ফুট জমি ছেড়ে দিলে স্থায়ী বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করা হবে। তা হলে নদী ভাঙন থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে।”

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন